কারা বিভাগের সিটিজেন চার্টার
১। আদালত থেকে আগত বন্দীদের জন্য
ক.প্রতিদিন আদালত থেকে আগত বন্দীদের শ্রেণীবিন্যাস করতঃ যথাযথ আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়।
খ.অসুস্থ বন্দীদের তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের নিমিত্তে হাসপাতালেভর্তিকরাহয়।
গ.নির্ধারিততারিখেবিচারাধীন বন্দীদেরকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজিরা নিশ্চিত করা হয়।
ঘ.কোন বন্দীর হাজিরার তারিখ নির্দিষ্ট না থাকলে আদালতের সাথে যোগাযোগ করে হাজিরার তারিখ সংগ্রহ পূর্বক আদালতে হাজিরার ব্যবস্থা করা হয়।
ঙ.নবাগত বন্দীদের আদালত থেকে আসার সময় তাদের সাথে রক্ষিত টাকা-পয়সা ও অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্যাদি যথাযথ হেফাজতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
চ.অসহায় অসচ্ছল বন্দীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির লক্ষে সরকারীকৌঁসুলীনিয়োগেরমাধ্যমেযথাযথআইনগতসহায়তাপ্রদানকরাহয়।
ছ.দন্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের সুবিচার প্রাপ্তিতে উচ্চ আদালতে আপীল দায়েরের ব্যাপারে তাদের আত্নীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
২। বন্দীদের সাথে দেখা সাক্ষাত সংক্রান্ত
ক.হাজতী বন্দীদের সাথে ০৭ দিন অন্তর একবার দেখা করা যাবে।খ. কয়েদী বন্দীর সাথে ১৫ দিন অন্তর একবার দেখা করা যাবে।
গ. নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বা পরে দূর-দূরান্ত থেকে আগত সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সাথে বন্দীদের সাক্ষাতের জন্য সাধারণত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনুমতি প্রদান করা হয়।
ঘ. ডিটেন্যু ও নিরাপদ হেফাজতী বন্দীদের সাথে দেখা করতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলাম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।
ঙ. দেখা-সাক্ষাত সর্বোচ্চ ৩০(ত্রিশ) মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ০৫(পাঁচ) জন একসাথে দেখা করতে পারবেন।
চ. বন্দীদের সাথে দেখা করার জন্য কোন প্রকার টাকা-পয়সা লেনদেন নিষিদ্ধ । কেউ টাকা দাবী করলে জেলসুপার/জেলারকে জানাতে হবে।
ছ. মোবাইল বা অন্য কোন নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে সাক্ষাত কক্ষে প্রবেশ করা যাবে না।
জ. বন্দীদের সাথে তাদের কৌঁসুলীবৃন্দযথারীতি দেখা-সাক্ষাত করতে পারবেন।ঝ. বন্দীদের সাথে দেখা করার জন্য জেলসুপার বরাবর আবেদন করতে হবে।
ঞ.কারাগারে আটক বন্দী বা কারও সম্পর্কে কোন তথ্য জানতে চাইলে কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত অনুসন্ধান এ খবর নিন।
ট.সাক্ষাত প্রার্থীদের সহজও ন্যায্য মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহের লক্ষে প্রত্যেক কারাগারে একটি করে কারা ক্যান্টিন/দোকান চালু করা হয়েছে৷আগত সাক্ষাত প্রার্থীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ন্যায্যমূল্যে ক্রয়করে বন্দীদের সরবরাহ করতে পারবেন। এতে একদিকে যেমন কারাগারে অবৈধ দ্রব্যাদি প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হবে অন্যদিকে সাক্ষাত প্রার্থীরা ন্যায্যমূল্যে সঠিক দ্রব্য ক্রয় করতে পারবেন।
ঠ.সাক্ষাত প্রার্থী কর্তৃক বন্দীর জন্য প্রদেয় মালামাল যথাযথভাবে বন্দীর নিকট পৌঁছানো নিশ্চিত করা হয়।
৩। বিশ্রামাগারেরব্যবস্থা
ক. প্রত্যেককারাগারেসাক্ষাতপ্রার্থীদেরজন্যবিশ্রামাগাররয়েছে।
খ. বিশ্রামাগারেপর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক পাখা, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও টয়লেটের সুব্যবস্থা রয়েছে।
গ. অফিসে কোন প্রয়োজনীয় সংবাদ পৌঁছাতে হলে বাহিরের গেইটে অনুসন্ধান এ যোগাযোগ করুন।
৪। পিসিতে টাকা জমাদান পদ্ধতি
ক.কারাগারে আটক বন্দীদের ব্যক্তিগত তহবিলে(পিসি) অর্থ জমা রাখার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ।
খ.বন্দীর আত্মীয়-স্বজন সরাসরি তার পিসিতে অর্থজমা দিতে পারবেন।
গ. বন্দীর পিসিতে মানি অর্ডারের মাধ্যমে ও টাকা জমা দেয়ার সুযোগ রয়েছে ।
৫। ওকালতনামাস্বাক্ষর
ক. ওকালতনামা স্বাক্ষরের ব্যাপারে অবৈধ অর্থের লেনদেন রোধে প্রত্যেক কারাগারের প্রধান ফটকের সামনেওকালতনামা দাখিলের জন্য নির্ধারিত বাক্স রয়েছে ।
খ. নির্ধারিত সময় অন্তর বাক্স খুলেওকালতনামা স্বাক্ষরান্তে বন্দীর কৌঁসুলি/আত্মীয়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
গ. ওকালতনামায় বন্দীদের স্বাক্ষরের জন্য কোন অর্থের প্রয়োজন হয় না। যদি কেউ এ ব্যাপারে কোন অর্থদাবী করে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি রিজার্ভ গার্ড এর কর্তব্যরত প্রধান কারারক্ষীঅথবাসরাসরিজেল সুপার/জেলারএরসাথেযোগাযোগকরুন।
৬। জামিনেমুক্তি
ক. আদালতথেকেপ্রাপ্তমুক্তি/জামিনআদেশেরপ্রেক্ষিতেমুক্তিযোগ্যবন্দীদেরতালিকাপ্রধানফটকেরসামনেনোটিশবোর্ডেটাঙ্গানোহয়।
খ. মুক্তিযোগ্য বন্দীদের নাম লাউড স্পীকারের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। যাতে বাইরে অপেক্ষমান আত্মীয়-স্বজন সহজে বন্দীর মুক্তির বিষয়টি জানতে পারেন।
গ. যেসব বন্দীর মুক্তি/জামিন আদেশে ভুলপরিলক্ষিত হয়। তাদের নামের তালিকা বাইরে টাঙ্গিয়ে দেয়া হয় এবং বিষয়টি লাউড স্পীকারের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। যাতে করে বন্দীর আত্মীয়-স্বজন অহেতুক অপেক্ষা না করেন।
৭। বন্দীরসাথেআচরণ
ক. কারাগারে আটক বন্দীদের সাথে মানবিক আচরণ নিশ্চিত করা হয়।
খ. কারাগারে আটক বন্দীদের কারা শৃংখলাভঙ্গের অপরাধ ছাড়া কোন প্রকার শাস্তি প্রদান করা হয় না।
গ. কারাবিধি অনুসারে প্রাপ্যতা অনুযায়ী প্রত্যেক বন্দীর খাবারও আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।
৮। চিকিৎসা ব্যবস্থা
ক. সরকারী ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি কারাগারে বন্দীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে । অসুস্থবন্দীদেরকে হাসপাতালে ভতি রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পথ্য প্রদান করা হয়। অসুস্থ বন্দীদের চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে উন্নততর চিকিৎসার জন্য কারাগারের বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
খ. কারাঅভ্যন্তরেমাদকসেবীবন্দীদেরসাধারণবন্দীথেকেপৃথকরেখেচিকিৎসাপ্রদানকরাহয়।
৯। প্রশিক্ষণ
ক. কারাগারে আটক বন্দীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তাদের আগ্রহ অনুসারে বিভিন্ন ট্রেডে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যাতে তারা সাজা ভোগের পর মুক্ত জীবনে ফিরে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত পেশায় নিয়োজিত হতে পারে।
খ. নানাবিধ প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ যেমন- টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসি, রেডিও, ফ্যান সহ ও অন্যান্য ইলেকট্রিক সামগ্রী মেরামত, গবাদি পশুপালন, মৎসচাষ, বেকারী দ্রব্যাদি ও বিভিন্ন ধরনের প্যাকিং ম্যাটেরিয়াল প্রস্তুত ইত্যাদির বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে ।
১০। বন্দীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রম
ক. কারাগারে আটক নিরক্ষর বন্দীদেরকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে । প্রত্যেক নিরক্ষরবন্দীকে এই শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে যাতে করে কারাগার থেকে মুক্তির পর সামাজিক জীবনে ফিরে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে।
খ. মরণব্যাধি HIV/AIDS এর ভয়াবহতা সম্পর্কে বন্দীদের সজাগ করা হয় এবং এই মরণ ব্যাধি রোধকল্পে নানান পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়।
গ. কারাগারে আটক বন্দীদের নিজস্ব ধর্ম পালন ও ধর্মীয় জ্ঞানা র্জনের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ।
ঘ. শৃংখলা বজায় রাখার জন্য বন্দীদের প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়।
ঙ. বন্দীদের জন্য মাসিক দরবার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ।
চ. বন্দীদের চিত্ত-বিনোদনের জন্য কারাভ্যন্তরে টিভি, রেডিও, ক্যারম, লুডু, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি খেলার ব্যবস্থা রয়েছে ।
ছ. সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দেখা-স্বাক্ষাতের সুবিধার্থে নিজ জেলায় বা নিকটস্থ কারাগারে বদলী করা হয়।
জ. প্রত্যেক কারাভ্যন্তরে বন্দীদের জন্য ক্যান্টিন ব্যবস্থা আছে ।
ঝ. কারাগারেবিভিন্নপ্রকারবৃত্তিমূলকওকারিগরীপ্রশিক্ষণচালুআছে ।